প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আমরা আজকে শিখবো প্রোটোপ্লাস্ট বা প্রোটোপ্লাজম কাকে বলে? প্রোটোপ্লাজম এর কাজ কি, প্রোটোপ্লাজম উপাদান, প্রোটোপ্লাজম চিত্র, প্রোটোপ্লাজম কে আবিষ্কার করেন, প্রোটোপ্লাজম কয়টি অংশ নিয়ে গঠিত, প্রোটোপ্লাজমকে জীবনের ভিত্তি বলা হয় কেন?
প্রোটোপ্লাজম চিত্র |
প্রোটোপ্লাস্ট কাকে বলে? - Protoplast
কোষ প্রাচীর দ্বারা পরিবেষ্টিত সমুদয় পদার্থ একসাথে প্রোটোপ্লাস্ট নামে পরিচিত। উদ্ভিদকোষ, ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকে জড় কোষ প্রাচীরের নিচেই প্রোটোপ্লাস্টের অবস্থান। প্রোটোপ্লাস্ট দুইভাগে বিভক্ত। যথা- সজীব প্রোটোপ্লাজম ও নির্জীব বস্তু বা অপ্রোটোপ্লাজমীয় উপাদান। নিম্নে এদের বর্ণনা দেওয়া হল।
প্রোটোপ্লাজম কাকে বলে?- Protoplasm
প্রোটোপ্লাস্টের নির্জীব অংশ বাদে অবশিষ্ট অংশটিই প্রোটোপ্লাজম অর্থাৎ, কোষের সমস্ত সজীব অংশকে একত্রে প্রোটোপ্লাজম বলে। অন্যভাবে, কোষের অভ্যন্তরে স্বচ্ছ, আঠালো এবং জেলির ন্যায় অর্ধতরল, কলয়ডালধর্মী সজীব পদার্থকে প্রোটোপ্লাজম বলে। গ্রিক শব্দ protos-প্রথম, plasma-আকার থেকে Protoplosm শব্দটির উৎপত্তি।
আবিষ্কার ও নামকরণ : বিজ্ঞানী পারকিনজি (Purkinje, ১৮৪০) সর্বপ্রথম প্রােটোপ্লাজম কথাটি ব্যবহার করেন। প্রােটোপ্লাজমই যে প্রাণের ভৌত ভিত্তি সে সম্পর্কে প্রথম ধারণা দেন বিজ্ঞানী ম্যাক্স সূজ (Max Schultze, ১৮৬৩) এবং টমাস হাক্সলে (Thomas Huxley, ১৮৬৮)।
আমাদের বায়োলজি ফেসবুক পেজ ফলো করুন।
প্রোটোপ্লাজমকে জীবনের ভিত্তি বলা হয় কেন?
প্রোটোপ্লাজমে পানির পরিমাণ ৭০-৯০% এবং একই সাথে কোষের তথা দেহের সকল মৌলিক জৈবিক কার্যাদি সম্পন্ন করে থাকে। এজন্যই প্রোটোপ্লাজমকে জীবনের ভৌত ভিত্তি হিসাবে চিহিৃত করা হয়।
প্রোটোপ্লাজমের ভৌত বৈশিষ্ট্য
ক. প্রোটোপ্লাজম অর্ধস্বচ্ছ, বর্ণহীন, জেলি সদৃশ অর্ধতরল আঠালো পদার্থ।
খ. এটি দানাদার ও কলয়ডালধর্মী।
গ. ইহা কোষস্থ পরিবেশ অনুযায়ী জেলি থেকে তরলে এবং তরল থেকে জেলিতে পরিবর্তিত হতে পারে।
ঘ. প্রোটোপ্লাজমের আপেক্ষিক গুরুত্ব পানি অপেক্ষা বেশি থাকে।
ঙ. উত্তাপ, অ্যাসিড ও অ্যালকোহলের প্রভাবে প্রোটোপ্লাজম জমাট বাধেঁ।
প্রোটোপ্লাজমের রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য
রাসায়নিকভাবে প্রোটোপ্লাজমে জৈব এবং অজৈব পদার্থ আছে। এতে অধিক পরিমাণে আছে পানি। জৈব পদার্থের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আছে বিভিন্ন ধরণের প্রোটিন, এরপর আছে কার্বোহাইড্রেট ও লিপিড ও ভিটামিন। এছাড়াও আছে অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন, কার্বন, কপার, ইত্যাদি।
প্রোটোপ্লাজমের জৈবিক বৈশিষ্ট্য
প্রোটোপ্লাজম বিভিন্ন ধরণের উত্তেজনায় সাড়া দেয়। খাদ্য তৈরি, খাদ্য হজম, আত্তীয়করণ, শ্বসন, বৃদ্ধি, জনন ইত্যাদি সকল মেটাবলিক কার্যকলাপ প্রোটোপ্লাজম করে থাকে। প্রোটোপ্লাজমের জৈবিক বৈশিষ্ট্যই জীবের বৈশিষ্ট্য। অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় প্রোটোপ্লাজম পানি গ্রহণ ও ত্যাগ করতে পারে। এদেরও মৃত্যু ঘটে।
প্রোটোপ্লাজমের চলন
প্রোটোপ্লাজম কখনো স্থির থাকে না। প্রোটোপ্লাজমের এ গতিময়তাকে চলন বলে। কোষ প্রাচীরযুক্ত ও কোষ প্রাচীরবিহীন প্রোটোপ্লাজমের চলনে ভিন্নতা দেখা যায়। কোষ প্রাচীরযুক্ত প্রোটোপ্লাজমে জলস্রোতের মতো যে চলন দেখা যায় তাকে আবর্তন বা সাইক্লোসিস বলে। আবর্তন আবার দু’ধরনের হয়ে থাকে।
১. একমুখী আবর্তন: যে চলনে প্রোটোপ্লাজম একটি গহ্বরকে কেন্দ্র করে কোষপ্রাচীরের পাশ দিয়ে নির্দিষ্ট পথে একদিকে ঘুরতে থাকে তাকে একমুখী আবর্তন বলে যেমন- পাতা ঝাঁঝির কোষস্থ প্রোটোপ্লাজমের চলন।
২. বহুমুখী আবর্তন: যে চলনে প্রোটোপ্লাজমে কতগুলো গহ্বরকে কেন্দ্র করে অনিয়মিত বিভিন্ন দিকে ঘুরতে থাকে তাকে বহুমুখী আবর্তন বলে। যেমন:- -র কোষস্থ প্রোটোপ্লাজমের চলন।
প্রোটোপ্লাজম কয়টি অংশ নিয়ে গঠিত
প্রোটোপ্লাজমের প্রধান তিনটি অংশ, যথা-
১। প্লাজমামেমব্রেন বা কোষঝিল্লি
২। সাইটোপ্লাজম এবং
৩। নিউক্লিয়াস
তথ্য: একাদশ - দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যবই (ড. মোহাম্মদ আবুল হাসান) {alertInfo}
আরো পড়ুন: